ডন প্রতিবেদন : বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় প্রতি বছর ২০ মে হতে ২৩ জুলাই পর্যন্ত এই ৬৫ দিন সকল প্রকার মৎস্য নৌযান দ্বারা যে কোনও প্রজাতির মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ থাকে। মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
আর এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার জন্য নৌ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে নৌ পুলিশ প্রধান শফিকুল ইসলাম, বিপিএম (বার), পিপিএম’র সভাপতিত্বে অনলাইন এবং অফলাইনে মঙ্গলবার (১৭ মে) এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তরের উপ-পরিচালক (সামুদ্রিক) এবং চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর, বরগুনা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী ও খুলনা জেলার মৎস্যজীবী, ট্রলারমালিক সমিতি, বরফকল মালিক সমিতি, মৎস্য আড়ৎদার সমিতি, ফিশিংবোট মালিক সমিতি ও সামুদ্রিক মৎস্য সংরক্ষণের সঙ্গে জড়িত সকল সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া অনলাইনে চাঁদপুর, বরিশাল ,চট্টগ্রাম ও খুলনা অঞ্চলের পুলিশ সদস্যসহ স্থানীয় মৎস্য আহরণ, পরিবহন ও বাজারজাতকরণে যুক্ত নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
সামুদ্রিক মৎস্য ও জলজ সম্পদ রক্ষায় নৌ পুলিশ ভোলা, বরগুনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কক্সবাজার, ফেনী ও ঝালকাঠি এই ১৪ জেলায় কাজ করছে।
নৌ পুলিশপ্রধান বঙ্গোপসাগরের ৬৫ দিনের মৎস্য আহরণ বন্ধ রাখা কার্যক্রম সফল করার জন্য সকলের সমন্বিত সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি ট্রলার মালিকদের প্রতিটি মাছ ধরার ট্রলারে ট্র্যাকার লাগানো এবং ট্রলার চালকদের পরিচয় সংরক্ষণের জন্য অনুরোধ জানান। নিষিদ্ধ সময়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ না ধরার জন্য জেলেদের সচেতন করার বিষয়ে স্থানীয় মৎস্যজীবী সংগঠনের নেতাদের সহযোগিতা কামনা করেন।
নৌ পুলিশপ্রধান অনলাইনে সংযুক্ত বরিশাল, চট্টগ্রাম, খুলনা ও চাঁদপুর অঞ্চলের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, মৎস্যজীবী, সামুদ্রিক মৎস্য আহরণকারী, বোট মালিক সমিতি, আড়ৎদার, বরফকল মালিক, ফিশিংবোট মালিক সমিতির সঙ্গে সংযুক্ত প্রতিনিধিদের সঙ্গে নৌ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে সরাসরি কথা বলেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের মতামত জানতে চান। তাঁরা মৎস্যসম্পদ রক্ষায় নৌ পুলিশের গৃহিত বিভিন্ন কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তাঁরা জানান, নৌ পুলিশের ক্রমাগত অভিযান এবং জনসচেতনতার জন্য দেশে ইলিশের উৎপাদন বহুলাংশে বেড়েছে এবং জনগণের কাছে রুপালী ইলিশ সহজলভ্য হয়েছে।
তাঁরা সামুদ্রিক জলসীমায় ৬৫ দিন মৎস্য আহরণ বন্ধ রাখার কার্যক্রম সফল করার জন্য নৌ পুলিশের গৃহিত পদক্ষেপের প্রতি একাত্মতা পোষণ করেন।
নৌ পুলিশপ্রধান বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিনের মৎস্য শিকার বন্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি।’
নিষিদ্ধ সময়ে উপকূলবর্তী এলাকায় সকল বরফকল বন্ধ রাখা এবং এ সময়ে সমুদ্রে মাছ ধরার উপযোগী কোনও সরঞ্জামাদি প্রস্তুত না করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
নৌ পুলিশপ্রধান আরও বলেন, নিষিদ্ধ সময়ে মাছ না ধরে বরং অন্যান্য যে কোনও পেশায় খণ্ডকালীন নিযুক্ত হতে পারলে মৎস্যজীবীরা যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হবেন, তেমনি দেশও উপকৃত হবে। এ সময়ে তিনি মৎস্যজীবীদের বিকল্প কর্মসংস্থানের কথা চিন্তা করারও অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, ‘শুধু আইন প্রয়োগের মাধ্যমে নয়; বরং সচেতনতার মধ্য দিয়ে এই নিষিদ্ধ সময়ে মাছ শিকার বন্ধ করতে পারলে দেশ উপকৃত হবে, দেশের মানুষ উপকৃত হবে এবং দেশের মৎস্য সম্পদও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।’
তিনি উপস্থিত সকলকে সক্রিয়ভাবে এই নিষেধাজ্ঞা পালন করার জন্য নৌ পুলিশকে সহায়তারও অনুরোধ জানান।