ডন প্রতিবেদন : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধিতে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মৃত্যুবরণকারী প্রকৌশলী হাদিসুরের পরিবারকে ৫ লাখ ৫ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ দিয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি)। টাকায় এই অর্থের পরিমাণ ৪ কোটি ৬০ লাখ।
হাদিসুরের ভাইকে চাকরি দেওয়ার পাশাপাশি জাহাজের অন্যান্য কর্মকর্তা ও নাবিকদের সাত মাসের বেতনের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) ঢাকায় বিএসসির আঞ্চলিক কার্যালয়ে হাদিসুরের পরিবার এবং অন্যান্য কর্মকর্তা ও নাবিকদের মাঝে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকার চেক তুলে দেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সাহসের আইকন। সাহস থাকলে কী না হয়, পদ্মা সেতু এর প্রমাণ। যা ২৫ জুন উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। আমরা জাহাজ এমভি সমৃদ্ধি হারিয়েছি। আমরা আরও জাহাজ সংগ্রহ করে সমৃদ্ধ হবো। সাহস ও মনোবল হারাবেন না। অফিসার ও নাবিকরা আবার কর্মক্ষেত্রে যোগদান করবেন।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘হাদিসুরকে আমরা ফিরে পাবো না। দুর্ঘটনার পর আমার সাথে টেলিফোনে হাদিসুরের বাবা বলেছিলেন, হাদিসুর আমাদের একমাত্র অবলম্বন। আমরা কোথায় যাবো। এ চেকটি একটা অবলম্বনের পথ খুঁজে দিলো। হাদিসুরের ভাইকে বিএসসিতে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে তাঁর যোগ্যতা অনুযায়ী নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন কোনও সংস্থায় স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করা হবে।’
বিএসসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর এস এম মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তফা কামাল, জাহাজের বীমাকারী প্রতিষ্ঠান সাধারণ বীমা করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর আবু জাফর মো. জালাল উদ্দিন, বীমা ব্রোকার টাইজার অ্যান্ড কোম্পানির বাংলাদেশ প্রতিনিধি এবং বিএসসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
চলতি বছরের ২ মার্চ ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের সময় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে রকেট হামলায় নিহত হন জাহাজটির থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর। গোলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ওই জাহাজ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। জাহাজের ২৯ নাবিককে মলদোভা-রোমানিয়া হয়ে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। আর ১৪ মার্চ দেশে আনা হয় হাদিসুরের মরদেহ। পরে তাঁকে দাফন করা হয় বরগুনায় তাঁর বাড়িতে।