ডন প্রতিবেদন : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরিচালিত গোয়েন্দা সংস্থা ও প্রতিবন্ধী কল্যাণ ট্রাস্টে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। বুধবার (১৩ জুলাই) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ মিরপুর থেকে ৩ সদস্যের ওই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন : মো. আজিজুল হাসান ওরফে এমরান। তাঁকে সহযোগিতা করতেন বিউটি আক্তার ও মো. কবির উদ্দিন পিয়াস দম্পতি।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ এসব কথা জানান।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, প্রতারক চক্রটি যুক্তরাষ্ট্রের কথিত বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থা ফেয়ারফ্যাক্সের অর্থায়নে ‘ফেয়ারফ্যাক্স বাংলাদেশ প্রকল্প’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান ও ‘বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ ট্রাস্ট’ নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলো। প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইট ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চক্রটি ফেয়ারফ্যাক্সে ৬ হাজার ৪৭২টি পদ ও প্রতিবন্ধী কল্যাণ ট্রাস্টে ১ হাজার ৯৪৪টি পদে কর্মী নিয়োগের কথা বলে। আগ্রহী প্রার্থীদের প্রতারকেরা পে-অর্ডারের মাধ্যমে ১৫০ থেকে ৫ শ টাকা একটি নির্দিষ্ট ব্যাংক হিসাবে পাঠাতে বলেন। চক্রটি দাবি করে, প্রতিষ্ঠানগুলোর সরকারি অনুমোদন আছে।
পুলিশ জানায়, চাকরিপ্রত্যাশীরা নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে আবেদন করলে কিছুদিন পর কোনও একটি কারণ দেখিয়ে সেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করে আবারও বিজ্ঞপ্তি দিতো চক্রটি। এভাবে দুই মাসের মধ্যে প্রতারকেরা প্রায় ১৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
গ্রেপ্তারের সময় প্রতারক চক্রটির কাছ থেকে ‘ফেয়ারফ্যাক্স বাংলাদেশ প্রকল্প’ ও ‘বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ ট্রাস্ট’ এই দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নামে গঠনতন্ত্র, কার্যনির্বাহী কমিটির ঘোষণাপত্র, প্যাড, প্রত্যয়নপত্র, অংশীদারি চুক্তিনামা, পত্রিকায় প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, জরুরি নোটিশ, পে-অর্ডার, ভর্তি ফরম, ভিজিটিং কার্ড জব্দ করে পুলিশ। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া তাঁরা কী করে সোনালী ব্যাংকে হিসাব খুলেছিলো, তা-ও পুলিশ খতিয়ে দেখবে বলেই সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
আসামি শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে কাজ করেছেন গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, প্রতারকেরা অফিসের ঠিকানা হিসেবে যে বাসার কথা উল্লেখ করেছিলেন, সেটির বাড়িওয়ালা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
‘এ ছাড়া ভুয়া বিজ্ঞপ্তিগুলোও তাঁদের চোখে পড়েছিলো। খোঁজ-খবর নিয়ে পরে পুলিশ তাঁদের শনাক্ত করে। তবে তাঁদের ধারণা, ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে তড়িঘড়ি করে চক্রটি সোনালী ব্যাংক থেকে ১৯ লাখ টাকা তুলে নিয়েছিলো।’
পুলিশ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, চক্রের প্রধান এমরান হিসাববিজ্ঞানে স্নাতক করেছেন। দলের অপর সদস্য বিউটি বেগম আর এমরানের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে। কাফরুল থানায় করা মামলায় পুলিশ আসামিদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করবে শুক্রবার।