The Our Don Don Environment,Don Intelligence Agencies and Other Forces,Don Special ঝড়ের রাতে জন্ম নেওয়া শিশু ‘সিত্রাং’কে দেখতে গেলেন ডিসি

ঝড়ের রাতে জন্ম নেওয়া শিশু ‘সিত্রাং’কে দেখতে গেলেন ডিসি




নিজস্ব প্রতিবেদক, ডন ও বাঙলার কাগজ; নোয়াখালী : গত সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত জারি করা হয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে। আশপাশের লোকজন ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে। সে সময় ঘরের ভেতর প্রসবব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা ফারজানা বেগম (৩৩)। এরই মধ্যে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে ঘরের ভেতর। তিনি আশ্রয় নেন চৌকির ওপর। সেখানেই রাত ১০টার দিকে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন ফারজানা। ওই নবজাতকের নাম ‘সিত্রাং’রেখেছেন ফারজানা ও তাঁর স্বামী শরিফ উদ্দিন। পুরো নাম ‘জান্নাতুল ফেরদাউস সিত্রাং’।

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার হরণী ইউনিয়নের চতলারখাল এলাকার বাসিন্দা শরিফ ও ফারজানা দম্পতি। বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) ঘূর্ণিঝড়ে জন্ম নেওয়া শিশু সিত্রাংকে দেখতে ওই দম্পতির বাড়িতে যান জেলা প্রশাসক (ডিসি) দেওয়ান মাহবুবুর রহমান। তিনি শিশুটির জন্য নতুন জামাকাপড় উপহার হিসেবে নিয়ে যান। সঙ্গে করে নেন মিষ্টিও। সেই সঙ্গে শিশুটির মায়ের হাতে তুলে দেন খাদ্যসামগ্রী ও নগদ ১০ হাজার টাকা। জেলা প্রশাসককে পেয়ে ওই পরিবারের সদস্য ও গ্রামের লোকজন উচ্ছ্বসিত।

আরও পড়ুন :   ব্যাটারি কারখানার দূষণে দিশেহারা চান্দিনার মানুষ! সব গবাদি পশু মরে সাফ।

ফারজানা বেগম বলেন, জেলা প্রশাসক তাঁর মেয়েকে দেখতে শহর থেকে এসেছেন, এর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে। তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা নেই। তিনি তাঁর মেয়ের জন্য সবার কাছে দোয়া চান।

সেই ভয়াল রাতের বর্ণনা করতে গিয়ে ফারজানা বেগম বলেন, তাঁর স্বামী নদীতে মাছ ধরেন। ঝড়ের দিন তিনি বাড়িতে ছিলেন না। ঝড়ের ৭ নম্বর বিপৎসংকেতের কথা শুনে ভয়ে আশপাশের অনেকেই ছুটতে থাকেন আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে। বেড়িবাঁধের কাছের এ বাড়িতে তিনি ছাড়া ছিল তিন ছেলে আর শাশুড়ি। বিকেল থেকে একটু একটু করে প্রসবব্যথা হচ্ছিল। সন্ধ্যার পর তা বেড়ে যায়। সন্ধ্যার দিকে জোয়ারের পানি ঘরে ঢুকে যায়। হাঁটুপানিতে প্লাবিত হয় ঘরের মেঝে। তখন তাঁরা ঘরের খাটের ওপর অবস্থান নেন। এদিকে প্রসবব্যথাও ক্রমশ বাড়তে থাকে। পরে প্রতিবেশী এক ধাত্রীর সহযোগিতায় তিনি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। এ ঘটনার স্মৃতি ধরে রাখতে তাঁরা মেয়ের নাম রাখেন সিত্রাং।

আরও পড়ুন :   নববর্ষের প্রাক্কালে নওগাঁয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের মাঝে বাইসাইকেল ও শিক্ষাবৃত্তি।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্কের মধ্যেও একজন অন্তঃসত্ত্বা মা যে সাহসের পরিচয় দিয়েছেন, সেটিকে তাঁরা সাধুবাদ জানান। প্রত্যেকটি নারী যাতে এ রকম সাহসী হন। তিনি বিষয়টি জানার পর শিশুটিকে দেখতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সঙ্গে করে কিছু উপহার সামগ্রী নিয়ে এসেছেন। ভবিষ্যতে শিশুটির পড়ালেখাসহ অন্যান্য বিষয়ে খোঁজখবর রাখা ও প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন :   Int’l Women Entrepreneurs’ Summit-2022 starts in city 

এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইশরাত সাদমীন, হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম হোসেন, হরণী ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের রাতে শিশুর জন্ম হওয়ার খবর শুনে তিনি পরদিন সকালেই ওই বাড়িতে যান। তিনি শিশুটির পরিবারকে নগদ কিছু আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, একজন মা যে কঠিন বিপদের মুহূর্তে কতটা সাহসী হতে পারেন, এই মা তার বড় উদাহরণ।

About Author

Leave a Reply

Related Post

মিরপুর থেকে অনেক আগের পরিত্যক্ত মর্টার শেল উদ্ধারমিরপুর থেকে অনেক আগের পরিত্যক্ত মর্টার শেল উদ্ধার



ডন প্রতিবেদন : রাজধানির মিরপুর চিড়িয়াখানা সড়কের পাশ থেকে অনেক আগের একটি পরিত্যক্ত মর্টার শেল উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (৬ অক্টোবর) সকালে শেলটি উদ্ধার করে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) বোমা

প্রিয় পাঠক, ভালো মানুষ এবং ভালো কাজের প্ল্যাটফর্ম আওয়ার ডনে আপনাকে স্বাগতম

X